ভারত ও বাংলাদেশের মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশনের ৩৮তম বৈঠক ২৫ আগস্ট নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন মাননীয় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জনাব জাহেদ ফারুক। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী জনাব একেএম এনামুল হক শামীমও ছিলেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন মাননীয় জলশক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। ১২ বছরের দীর্ঘ ব্যবধানের পর অনুষ্ঠিত হওয়ায় বৈঠকটি তাৎপর্যপূর্ণ, যদিও জেআরসি (JRC)-র কাঠামোর অধীনে দ্বিপাক্ষিক প্রযুক্তিগত কার্যাবলি এই মধ্যবর্তী সময়েও অব্যাহত ছিল। আজকের বৈঠকের আগে ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার পানি সম্পদ বিষয়ক সচিব পর্যায়ের মতবিনিময় হয়।
অভিন্ন/সীমান্ত/আন্তঃসীমান্ত নদী বিষয়ে পারস্পরিক স্বার্থ-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য একটি দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া হিসেবে ১৯৭২ সালে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশন গঠিত হয়েছিল।
এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বন্যার তথ্য আদান-প্রদান, নদী দূষণ মোকাবেলা, পলি ব্যবস্থাপনার উপর যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা, নদীর তীর রক্ষার কাজ ইত্যাদি সহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংক্রান্ত চলমান বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। উভয় পক্ষ কুশিয়ারা নদীর অন্তর্বর্তীকালীন পানি বণ্টন বিষয়ে সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু চূড়ান্ত করেছে। উভয় পক্ষই এই বিষয়ে ২০১৯ সালের অক্টোবরে স্বাক্ষরিত ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক অনুসারে ত্রিপুরার সাব্রুম শহরের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে ফেনী নদীর উপর পানি ইনটেক পয়েন্টের নকশা এবং অবস্থান চূড়ান্তকরণকে স্বাগত জানিয়েছে।
ভারতের বাংলাদেশকে সহযোগিতার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল বন্যার রিয়েল-টাইম ডেটা আদান-প্রদান করা। বাংলাদেশকে অপ্রত্যাশিত বন্যার ঘটনা মোকাবেলায় সহায়তা করতে ভারত সম্প্রতি বন্যার তথ্য আদান-প্রদানের মেয়াদ ১৫ অক্টোবরের পরেও বাড়িয়েছে।
ভারত ও বাংলাদেশের রয়েছে ৫৪টি অভিন্ন নদী, যেগুলোর মাঝে ৭টি নদীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পানি বণ্টন চুক্তির কাঠামো উন্নয়নের জন্য আগেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। বৈঠকে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য আরও ৮টি নদীকে অন্তর্ভুক্ত করে চলমান সহযোগিতার এই ক্ষেত্রকে আরও প্রশস্ত করতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেআরসি-এর কারিগরি স্তরের কমিটিতে আরও আলোচনা করা হবে।