শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন
প্রধান সংবাদ :

আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫০ জন আহত ।

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২


বরগুনার আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজন সাংবাদিকও রয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোববার দুপুরে আমতলী পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বেলা ১২টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হয়। প্রথমে উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা বক্তৃতা করেন। পরে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জিএম ওসমানী হাসান, এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্মসাধারণ সম্পাদক চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বক্তৃতা করেন। তার বক্তব্যের পরই সম্মেলনে উত্তেজনা তৈরি হয়। মঞ্চে থাকা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন আমতলী পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিএম মুছা, জিএম ওসমানী হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি সাবেক পৌরমেয়র নাজমুল আহসান নান্নু ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান মিয়া। একপর্যায়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ রূপ নেয়। মুহূর্তেই সম্মেলনস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আমতলী একে স্কুল এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল অঞ্চল) অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন এবং নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় নেতারা বারবার দুই পক্ষকে নিবৃত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

সংঘর্ষের সময় উপজেলা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সবুজ মালাকার, শাহাবুদ্দিন শিহাব ও ইসফাক আহম্মেদ, সুজন প্যাদা, রুহুল আমিন, ত্বোহাসহ ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী জিএম হাসান ও জিএম মুছাকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আশ্রয় নেন। সভাস্থলের বাইরে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ চলে ঘণ্টাব্যাপী। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে সাত সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত জিএম মুছা, জিএম হাসান, গাজী রুবেল, গাজী বায়েজিদ, শাহীন, সোহেল রানা, রাকিবুল ইসলাম, আলী হোসেন, জসিম হাওলাদার, তাজুল ইসলাম, মুববি সরোয়ার সোয়াম, মধু মোল্লা, দুলাল পাহলান, ময়জদ্দিন ও সাংবাদিক মাহবুবুল আলমকে প্রথমে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে জিএম মুছা, সোহেল রানা, বায়েজিদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত অপর সাংবাদিকরা হলেন-সোহাগ মিয়া, অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিন পান্না, সিফাত, সোহাগ হাফিজ, সাইফুল ইসলাম ও জাহিদ।

এদিকে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা আবার সভাস্থলে এলে সম্মেলন শুরু হয়। এ সময় প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন সম্মেলনে সংঘর্ষের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কমিটিতে পদপদবি না দেওয়ার ঘোষণা দেন।

সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা সম্মেলনে দ্বিতীয় অধিবেশন না করেই চলে যান।

আমতলী পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিএম মুছা বলেন, আখতারুজ্জামান বাদল খানের উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ করায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমার পক্ষের ১৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা যুগ্মসাধারণ সম্পাদক চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খানের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পৌরমেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, জিএম মুছা ও তার ভাই হাসান, নাজমুল হাসান নান্নু, ফোরকান মিয়া, শাহজাহান কবির ও গাজী সামসুল হক গন্ডগোল করতেই সম্মেলনে এসেছে। তারাই সম্মেলন বানচাল করতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের কঠোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © 2019 southbengalnews
themesba-lates1749691102