কিশোর অপরাধীর সংখ্যা বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তাদের মতে, এ কারণে ধারণক্ষমতার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি অপরাধী এখন সরকারি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, এখন শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ শিশু আছে। এতে বোঝা যায়, দেশে কিশোর অপরাধ বেড়ে গেছে। এজন্য আরও কিছু কিছু জায়গায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া শিশুদের যেখানে রাখা হবে, সেখানে পুনর্বাসনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈঠকের কার্যপত্রের তথ্যানুযায়ী, সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় দেশে বর্তমানে তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে একটি বালিকা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ধারণক্ষমতার কম থাকলেও বালক শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র দুটিতে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ শিশু রয়েছে। টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৩০০ আসনের বিপরীতে ৯০৯ শিশু রয়েছে। যশোরের পুলেরহাট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১৫০ জনের ধারণক্ষমতার বিপরীতে ৩৫৩ জন শিশু রয়েছে। গাজীপুরের কোনাবাড়ির বালিকা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ১৫০ আসনের বিপরীতে ৮৯ জন রয়েছে।
বৈঠকে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা পূরণের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত হিজড়া শনাক্তকরণের কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এছাড়াও ক্যানসার, কিডনিসহ ছয়টি জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সরকারি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জটিল ও দুরারোগ্য ছয়টি রোগের চিকিৎসায় এককালীন যে অর্থ প্রদান করা হয়, তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চেকের মাধ্যমে প্রদানের সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সদস্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, শিবলী সাদিক, বদরুদ্দোজা ফরহাদ হোসেন ও আরমা দত্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এতে অংশ নেন।