নাটোরের লালপুর উপজেলার উধনপাড়ার বোমা কালামখ্যাত আবুল কালামকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বাড়ির পাশের পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রীর আগের পক্ষের ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নাটোরের লালপুর উপজেলার বোমা কালাম খ্যাত আবুল কালামের, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় ১০ বছর আগে একই এলাকার বড় বাদকয়া গ্রামের জহিম উদ্দিনের মেয়ে মোছা. আরজিনা খাতুনকে (৩৫) বিয়ে করে সেখানেই ঘর জামাই হিসেবে বসবাস শুরু করেন। তাদের সংসারে আবির নামে ৯ বছর বয়সি একটি ছেলে রয়েছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিহতের ছোট ভাই সহিদুজ্জামান সালাম ও চাচাতো ভাই মাসুদ রানা প্রতিবেশিদের মাধ্যমে তাদের ভাই আবুল কালামকে হত্যা করে লাশ গোপন করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সেখানে গিয়ে বাড়ির পিছনে ছোপ ছোপ রক্ত ও ভাইয়ের ব্যবহৃত শীতের টুপি ও স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখেন। তবে ভাইকে খুঁজে পাননি।
পরে লালপুর থানায় গিয়ে লিখিত মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহতের স্ত্রী মোছা. আরজিনা খাতুন, তার বাবা জহিম উদ্দিন (৬০), মা মোছা. জালেমা (৫৫) ও আগের পক্ষের ছেলে আল আমিনকে (১৬) অভিযুক্ত করা হয়। পুলিশ তাৎক্ষনিক আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে সে তার মায়ের সঙ্গে সৎ বাবার পারিবারিক কলহের কারণে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো পুকুর পাড় থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, নিহত আবুল কালাম বোমা তৈরি, বিক্রিসহ নানা ধরণের চুরি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। বহুবছর আগে একবার তার বাড়িতে বড় ধরনের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে এলাকার মানুষ তাকে বোমা কালাম হিসেবেই চেনে।
লালপুর থানার ওসি মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, আবুল কালাম হিসেবে এলাকার কেউ আর তাকে চিনে না। সমাজে বোমা কালাম হিসেবেই সে পরিচিত। এ ঘটনায় অন্য অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার নিহত আবুল কালাম ও স্ত্রী আরজিনা খাতুনের বনিবনা না হওয়ায় পারিবারিক কলহের বিষয়ে স্থানীয় বিলমারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টুর শালিস বৈঠক করার কথা ছিল।