সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন
প্রধান সংবাদ :

তাদের হাত ধরেই বাজারে জাল ডলার।

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

ডলার সংকটের কারণে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের অর্থনীতি যেখানে কালো পাথরে পরিণত হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের কয়েক ব্যক্তি বাজারে ছাড়ছেন হাজারো ডলার। অবাক হলেও সত্য উজ্জ্বল দাস ওরফে সোবহান শিকদার (৩৪), আব্দুর রশিদ (৫৫), মমিনুল ইসলাম (৪৬) ও শাহ মো. তুহিন আহমেদ ওরফে জামালের (৪০) মতো কয়েকজন অপরাধীর হাত ধরে দেশের বাজারে এসেছে জাল ডলার।

তারা ডলারের বর্তমান বাজার সংকটের সুযোগ নিয়ে মানুষের সঙ্গে এ প্রতারণা করছেন। আবার অনেকেই তাদের জাল ডলার কিনে হারাচ্ছেন বহু অর্থ।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে জাল ডলার ছাড়াও ভারতীয় রুপি, জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে গত বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর দারুস সালাম থানায় একটি মামলা দায়ের হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার অপরাধীদের কাছ থেকে ২৭ লাখ টাকা মূল্যের জাল টাকা, ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার মিলেছে। পাওয়া গেছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প এবং জাল নোট তৈরির বিভিন্ন উপকরণ।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মো. হারুণ-অর-রশীদ। তিনি বলেন, আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে প্রায় ২০০ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি জালনোট বাজারে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল গ্রেফতার অপরাধী চক্রটি।

গত বুধবার দারুস সালাম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জালনোট ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প প্রস্তুতকারক চক্রের মূল হোতা উজ্জ্বল দাসকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দারুস সালামের একটি বাসা থেকে জালনোট ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প প্রস্তুত করা অবস্থায় বাকি তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি প্রধান বলেন, অপরাধীরা মতিঝিল এলাকা থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ, নয়াবাজার ও মিডফোর্ট থেকে রঙ, ফয়েল সংগ্রহ করে বিভিন্ন দেশের জালনোট ও স্ট্যাম্প তৈরি করতেন। বর্তমান বিশ্ব বাজারে ডলার সংকট হওয়ায় তারা ভারতীয় ও মার্কিন জাল মুদ্রা তৈরি করে বিদেশেও পাচার করতেন। সারা দেশে তাদের এজেন্ট রয়েছে।

তিনি আরও জানান, অপরাধীরা প্রথম পর্যায়ে ১০ লাখ টাকা ১ কোটি টাকার জালনোট, এরপর ২০ লাখ, প্রান্তিক ধাপে ৫০ লাখ টাকা বিক্রি করতো। এজেন্টদের চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো পরিমাণের জালনোট প্রস্তুত করেও দিতেন তারা।

বাংলাদেশি টাকার ক্ষেত্রে তারা কম মূল্যমানের নোট, যেমন- ১০০ ও ২০০ টাকা জাল করছিলেন। খালি চোখে এসব নোটের জাল ধরা প্রায় অসম্ভব।

হারুণ-অর-রশীদ বলেন, প্রায় ৮-৯ বছর ধরে চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প মেয়াদে বাসা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন মূল্যমানের জাল নোট, ভারতীয় রুপি, আমেরিকান ডলারসহ রেভিনিউ স্ট্যাম্প প্রস্তুত করে আসছিলেন। তাদের কাছে যে পরিমাণ জাল টাকা তৈরির কাগজ ও অন্যান্য উপকরণ পাওয়া গেছে তা দিয়ে আগামী রমজান-ঈদুল ফিতরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার জাল নোট ও রেভিনিউ স্ট্যাম্প বাজারে ছাড়া হতো।

তিনি আরও বলেন, সস্তায় পেয়ে বাইরে থেকে ডলার কিনে অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন। এর দায় যে কিনবে তারই। কারণ, ডলার কেনা উচিৎ ব্যাংক অথবা কোনো অনুমোদিত মানি এক্সচেঞ্জ থেকে। আমরা এই চক্রটিকে গ্রেফতার না করলে পরদিনই জাল নোট আর স্ট্যাম্পগুলো বাজারে চলে যেতো। তাদের এমন কিছু এজেন্টের নাম পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। দেশবাসীকে ব্যাংক অথবা অনুমোদিত জায়গা থেকে ডলার কিনতে অনুরোধ করেছেন ডিবি প্রধান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © 2019 southbengalnews
themesba-lates1749691102