টাকা চুরির অভিযোগে গৃহকর্মী জেসমিন বেগম (৩০)কে মারধর ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে গৃহকর্তা ও গৃহকত্রীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় আহত গৃহকর্মীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।
গৃহকর্মী জেসমিন বেগম বরিশাল নগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আমির কুটির এলাকার মৃত তুহিনের স্ত্রী।
স্বামীর মৃত্যুর পরে দুই সন্তানের ভরণপোষণের জন্য মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্য এসআই বিজয় জানান, গৃহকর্ত্রীকে বটি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে।
এ অভিযোগ নিয়ে ওই গৃহকর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি সে একই এলাকার ছায়াবীথি ভবনের চারতলার বাসিন্দা ও মুদী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের ফ্ল্যাট বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো।
জেসমিন বেগমের ভাই মো. রাসেল বলেন, মো. শফিকের ঘরে দীর্ঘদিন ধরে গৃহকমীর কাজ করে। গৃহকর্তার ১৫ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। টাকা চুরির জন্য বোনকে দায়ি করা হয়। এ নিয়ে শনিবার সকালে গৃহকর্তী তন্নি আক্তারের সঙ্গে বোনের তর্ক হয়। তখন গৃহকর্তা মারধর ও জুতা দিয়ে পিটিয়েছে এবং গৃহকর্তী তন্নী তাকে মারধর করে বটি দিয়ে কোপ দিয়েছে। এতে তার মাথার তিন স্থানে জখম হয়েছে। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। বোনের মাথায় ৬টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাসেল।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে রাসেল বলেন, বোন এখন কথা বলতে পারে না। তিনি সুস্থ হলে কথা বলে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।
আর ভুক্তভোগী জেসমিন জানান, আমিরকুটির আভাস অফিস সংলগ্ন মুদি দোকানদার শফিকের বাসায় গত এক বছর যাবত কাজ করেন তিনি। শনিবার সকালে শফিকের বাসায় কাজ শেষে যাওয়ার সময় তাকে টাকা চুরির কথা বলে মারধর করেন শফিকের স্ত্রী। এ সময় তাদের অনেকবার বলেছি আমি টাকা চুরি করিনি, কিন্তু কে শোনে কার কথা। আমি মারতে নিষেধ করায় তারা দরজা আটকিয়ে আমাকে বটি দিয়ে কোপ দেয় শফিক ও তার স্ত্রী তন্নি। এ সময় ডাকচিৎকার করলে আশপাশের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, কোনো অভিযোগ পায়নি। ঘটনা শুনে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা এলে বিষয়টি বলতে পারবো।
গৃহকর্তা শফিকুল ইসলামের ছোট ভাই জহির উদ্দিন লিটু হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, টাকা চুরির বিষয় নিয়ে বাসায় সালিশ মীমাংশা হয়। তখন ভাই শফিক রাগ করে চড় দেয়। তখন জেসমিন ও ভাই রাসেল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেয়। তাদের ফাঁসানোর জন্য জেসমিন রান্নাঘর থেকে বটি এনে তার ভাইকে দিলে সে কুপিয়েছে।
এদিকে মুদি দোকানদার শফিক মারধরের বিষয়টি স্বীকার করলেও কোপানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
বরিশাল শেরই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রেজাউল করিম সিকদার জানান, রোগীর অবস্থা আশংকাজনক। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।