রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন
প্রধান সংবাদ :

দাফনের তিন সপ্তাহ পর মরদেহের ময়নাতদন্ত।

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে দাফনের তিন সপ্তাহ পর সাংবাদিকপুত্র মুসাব্বির খান জারিফের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু আব্দুল্লাহ খানের উপস্থিতিতে বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বরিশাল নগরের মুসলিম গোরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করে প্রথমে সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়।

পরে মরদেহ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমানুল্লাহ আল বারী।

তিনি বলেন, গত ৭ ফেব্রুয়ারি মৃত জারিফের বাবা বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও আরটিভির প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী খান জসিম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

যে মামলার প্রেক্ষিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মৃতের পিতা সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী খান জসিম জানান, গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বরিশাল নগরের কাটপট্রি এলাকার নিজ বাসা থেকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বন্ধুদের সঙ্গে মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে বের হন মুসাব্বির খান জারিফ।

মাদারীপুর পৌঁছে একাধিকবার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় এবং ২৮ জানুয়ারি জারিফ তার মাকে চলে আসার কথাও জানায়।

তিনি বলেন, ২৮ জানুয়ারি রাত ১২টার দিকে জারিফের মোবাইলে কল করা হলে রিসিভ করেনি সে। পরবর্তীতে ২৯ জানুয়ারি বেলা ১২টায় আবারও জারিফের মোবাইলে কল দেওয়া হলে তখনও সে রিসিভ করেনি। এ নিয়ে চিন্তার এক পর্যায়ে জারিফের বন্ধু বিকির মোবাইলে কল দিলে সেও রিসিভ করেনি। পরে বিকেল ৩টার দিকে আবার কল দিলে বিকি কল রিসিভ করে জানায়, জারিফ মাদারীপুর লেকে গোসল করতে গিয়েছিল বিধায় ফোন ধরতে পারেনি। তখন কথা বলতে চাইলে জারিফ বাড়ির সামনে গেছে জানিয়ে বিকি ফোন কেটে দেয়।

এদিকে, ২৯ জানুয়ারি আসরের পর জারিফের তিন বন্ধু দ্বীপ, ইব্রাহিম ও রাজন আমাদের বরিশালের বাসায় এসে জিজ্ঞেস করে জারিফের হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের কোনো সমস্যা আছে কি-না? তখন আমি তার এ ধরনের কোনো রোগ নেই জানিয়ে তাদের কাছে কি হয়েছে জানতে চাই। ওই সময় তারা একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলে। সেখানে কল দেওয়া মাত্রই জানতে পারি যে, জারিফ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। পরে সেখান থেকে জারিফকে নিয়ে বরিশাল শেবাচিমের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় তার বন্ধুরা।

পথিমধ্যে আমার ছেলে, বিকিসহ হাসপাতালে যোগাযোগ করা সেই মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তারা কেউ রিসিভ করেনি। তবে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে যখন জারিফকে শেবাচিমের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা হয়, তখন চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে স্বাভাবিকভাবেই জারিফের দাফন সম্পন্ন করি। কিন্তু সময় অতিবাহিত হলে বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া জারিফের মোবাইল খতিয়ে দেখে বিভিন্ন ছবিসহ ডাটা খুঁজে না পাওয়া, কয়েকদিন পর মোটরসাইকেল উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়দের দেওয়া বিভিন্ন তথ্যে জারিফের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে নিশ্চিত হই। এছাড়া যারা মাদারীপুরে জারিফের সঙ্গে ছিল তারমধ্যে বিকি হাসপাতালেও আসেনি, এমনকি আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগও করেনি। আবার যে অংকনের নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল, তার পরিবারসহ অন্য বন্ধুরাও যা বলেছে, তাদের একজনের সঙ্গে অন্যজনের কথার মিল নেই।

সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী খান জসিম বলেন, জারিফকে মাদারীপুর হাসপাতালে ভর্তি করাসহ মৃত্যুর রহস্য গোপন রাখার পেছনে বড় ধরনের কোনো অপরাধ সংগঠিত হয়েছে- এমনটাই আমরা জানতে পেরেছি। এক কথায়। আমার ছেলেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিষাক্ত নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যে কারণে চারজনের নাম উল্লেখ করে আমি একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। আমি চাই, আমার ছেলে হত্যার সঠিক কারণ উদঘাটন হোক এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © 2019 southbengalnews
themesba-lates1749691102