বরিশাল জেলার মুলাদী, হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও ভোলার কিছু অংশে যাতায়াতের জন্য এখানকার লাখ লাখ মানুষকে মীরগঞ্জ খেয়াঘাট অতিক্রম করতে হয়। বিগত বছরগুলোতে বরিশাল জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন মীরগঞ্জ খেয়াঘাটে ইজারাদার কর্তৃক লাঞ্ছিত হতে হয়েছে যাত্রীদের।
খেয়াঘাটে ভাড়ার তালিকা প্রদর্শন না করে কয়েকগুণ বেশি আদায় এবং টাকা না দিলে মারধর শেষে নদীতে ফেলে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে বিগত বছরগুলোতে হামলা-মামলা এবং প্রশাসনের অভিযান সহ বিভিন্ন মহলের তৎপরতার মধ্যেও গলাকাটা ভাড়া আদায় করে মানুষ জিম্মি অব্যাহত ছিলো। এ খেয়াঘাট মানুষ পারাপারে ৭ টাকার স্থলে তিন থেকে চার গুন এবং বাইসাইকেল, মটর সাইকেল সহ অন্যান্য পণ্য পরিবহনেও মাত্রা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হতো। কিন্তু এবার খাস কালেকশনের খবরে এসব এলাকার বাসিন্দারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। কেননা জেলা পরিষদ যদি তদারকি করে খাস কালেকশনের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেন তাহলে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হবে যাত্রীদের এমনটাই ধারনা তাদের। যদিও এ সম্পর্কে বরিশাল জেলা পরিষদ থেকে কোনো সু-স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত দু’দিন ধরে জেলা পরিষদে উপস্থিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সহ দায়িত্বশীল কারোরই বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তারা সকলেই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর এর সাথে যোাগাযোগের কথা জানিয়ে দেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, চেয়ারম্যান এ বিষয়ে কাউকে কোনো বক্তব্য দিতে নিষেধ করেছেন। তাই বক্তব্য তার কাছ থেকেই নিতে হবে।
গত মঙ্গলবার ও বুধবার দু’দিন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অফিস না করায় তাকে বার বার মোবাইল ফোনে কল করা হলে এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে জেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর একাধিক সাংবাদিকদের কাছে মীরগঞ্জ খেয়াঘাটের অনিয়মে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এতে করে বাংলা ১৪০৩ সালের জন্য ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্রের জন্য দরপত্র আহবানে ২ কোটি টাকার খেয়াঘাট এবার সর্বোচ্চ ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত দর উঠলে তা ৬ষ্ঠ বারে নিয়ম অনুযায়ী দরদাতা নির্বাচিত না হওয়ায় খাস কালেকশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা পরিষদ।
এদিকে স্থানীয় ভূক্তভোগীরা জানিয়েছে, বিগত দিনে খাস কালেকশনের নামে নৈরাজ্য দেখা দেয়ায় নানান অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিলো। তারা এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।