শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
প্রধান সংবাদ :

পরিবহন ব্যয় ও চালের দাম ৭০ পয়সার বিপরীতে পাঁচ টাকা বাড়বে কেন

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০২২

সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বর্ধিত দামের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সিন্ডিকেট তথা সুযোগসন্ধানীদের সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ করে দিয়েছেন।

তারপরও বাজারে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বেড়ে চলেছে। এতে প্রমাণিত হয়, বাজারের ওপর সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ নেই। যেভাবে বাজার তদারক করার কথা, সেটাও হচ্ছে না।

১৭ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে চালের দাম নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ‘তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ট্রান্সপোর্ট খরচ সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা বাড়তে পারে প্রতি কেজিতে। তবে দাম বেড়েছে চার টাকা। এর কোনো যুক্তি নেই।’ বাংলাদেশে যুক্তির বাইরেই যে বেশির ভাগ কাজ হয়, মন্ত্রী-আমলারা তা সেভাবে দেখতে না পারলেও জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।

আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, কেবল চাল ও ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে না, প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। দেশে উৎপন্ন সবজির দামও বেড়েছে লাগামহীনভাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছিল, এখানকার ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিয়েছেন।

আবার যখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমতে শুরু করল, ব্যবসায়ীরা ডলার-সংকটের দোহাই দিয়ে বর্ধিত দাম কমাতে নারাজ। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল। এখানেও পরিবহন ব্যয় ও মুরগির খাবারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখানো হলো। পরে এই দুটি পণ্যের দাম কিছুটা কমলেও আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি। তেলাপিয়া, পাঙাশসহ বিভিন্ন মাছেরও দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।

২১ আগস্ট প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, সরবরাহের ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর কুষ্টিয়া ও নওগাঁয় প্রধান দুটি চালের মোকামে প্রতি কেজি চালের দাম চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে গেছে। মিলমালিকেরা এ জন্য ধানের বাড়তি দাম ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। প্রশ্ন হলো, পরিবহন ব্যয় চালের দামের ওপর কতটা প্রভাব ফেলেছে? বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ৫০ পয়সা। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী ৭০ পয়সা। তাহলে প্রতি কেজি চালের দাম চার থেকে পাঁচ টাকা বাড়ার কী যুক্তি থাকতে পারে?

যুক্তি একটাই, যে যেখানে পেরেছেন, ভোক্তার পকেট কাটছেন, যার আভাস বাণিজ্যমন্ত্রীর কথায়ও এসেছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার জন্য তো পণ্যের দাম এত বেশি বাড়তে পারে না।

এর অর্থ হলো চালের এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার দায়িত্ব কার? অবশ্যই সরকারের। সরকার যদি জানেই এর পেছনে সিন্ডিকেট বা সুযোগসন্ধানীদের কারসাজি আছে, তারা ধরছে না কেন?

পণ্যের দামও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে হলে সরকারকে অবশ্যই অসাধু ব্যবসায়ী চক্র বা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। দু-চারটি স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কিছু জরিমানা আদায় করলে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। তদারকির কাজটি করতে হবে নিয়মিত।

অন্যদিকে সরকার যে এক কোটি পরিবারকে স্বল্প দামে কিছু পণ্য ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সরবরাহ করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারলে বাজারে কিছুটা হলেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © 2019 southbengalnews
themesba-lates1749691102