আদানি গ্রুপের কাছ থেকে চড়া মুল্যে বিদ্যুৎ কেন আনা হবে বলে জাতীয় সংসদে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। চড়া দামে এই বিদ্যুৎ আনা জনগণের স্বার্থে কি না সরকারকে তা পরীক্ষা করতে বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার(৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু এ প্রশ্ন তোলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
জাপা মহাসচিব বলেন, আমরা গ্রামে গ্রামে বিদ্যুতের লাইন পেয়েছি কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি যদি সহনশীলের মধ্যে না থাকে, গ্রামের মানুষ টেলিভিশন, ফ্রিজ কিনেছে এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে তারা সেগুলো ব্যবহার করতে পারবে কি না এই প্রশ্ন আছে।
পায়রা বিদ্যুুৎ কেন্দ্রে ১২১৪ মেগাওয়াটের প্রতি ইউনিটের মূল্য ১৩.১৩ টাকা ২৬ পয়সা। বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ ৩ হাজার কোটি টাকা। সেখানে এস আলমের কোম্পানির ১২৪৪ মেগাওয়াটের প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে ১৮ টাকা ৩৯ পয়সা। ক্যাপাসিটি চার্জ ৫ হাজার টাকা। সব চেয়ে আশ্চর্য হলাম যে আদানি গ্রুপ নিয়ে ভারতে সমালোচনা, তারা ভারতে ১৫০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছেন, সেখান থেকে প্রতি ইউনিটের জন্য ২৪ টাকা ৫০ পয়সা ও ক্যাপাসিটি চার্জ বছরে দিতে হবে ৬ হাজার কোটি টাকা। এই আদানি গ্রুপ থেকে এতো চড়া মূল্য দিয়ে বিদ্যুৎ কেন আনব?, আনব কি না, আনলে জনগণের স্বার্থে কিনা, নিশ্চিয়ই সরকার বিষয়গুলো আবারও পুনঃপরীক্ষা করে দেখবেন।
ইসলামী ব্যাংকে ভয়ঙ্কর নভেম্বর: জাপা মহাসচিব বলেন, ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ইসলামী ব্যাংকের দুই হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে নানা উপায়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র নভেম্বরে আড়াই হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। এই ভুয়া ঠিকানা দিয়ে ঋণ নেওয়া হয়, ডলারের অভাব এইগুলি কিন্তু বিদেশে পাচার হয়। এগুলো সরকারকে কঠোরভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে মনিটর করা প্রয়োজন।
একমাসে ১৮৯ চালক-শ্রমিকের মৃত্যু: গত জানুয়ারি মাসে ৫ হাজার ৯৩টি দুর্ঘটনা হয় ৫৮৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়। প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন মারা গেছেন। এক দিনে সর্বোচ্চ ৩০ জন, সর্ব নিম্ন ৫ জন। সড়কে কোনো শৃঙ্খলা নেই। চালকের লাইসেন্স নেই, এইগুলো যদি সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয় তাহলে দুর্ঘটনা কমে যাবে।
রাষ্ট্রপতির অবসরের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে চুন্নু বলেন, শ্রীলঙ্কা, ভারত এবং পাকিস্তানে রাষ্ট্রপতি অবসর নেওয়ার পর কী কী সুযোগ-সুবিধা পান আমি তার বিস্তারিত বিবরণ এই সংসদে তুলে ধরেছিলাম। আমি সংসদে বলেছিলাম রাষ্ট্রপতি অবসরে যাওয়ার পর তার সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য একটা বিল আনেন। কিন্তু এটা আনা হয়নি, আমি এখনো অনুরোধ করবো এরকম একটা বিল আনেন।