রাজধানীর সব উৎসব ঘিরে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। উৎসব উদযাপনকে ঘিরে জনবহুল স্থান টার্গেট করে ছিনতাই কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল একটি চক্র।
রাজধানীর মতিঝিল, মুগদা, ওয়ারী, খিলগাঁও, বংশাল, সবুজবাগ ও শাহজাহানপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের হোতাসহ মোট ২৯ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত একযোগে আভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে সুইচ গিয়ার, চাকু, ক্ষুর, কাঁচি, ব্লেড, মোবাইল ফোন সেট এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আটকরা হলেন- রাকেশ ওরফে কালাচাঁন (১৯), মান্নান (৪০), ইমরান গাজী (২৯), আকাশ (২৫), ইসরাফিল (১৯), সিয়াম (২০), মানিক (২৪), নাহিদ পারভেজ (৩৭), আরাফাত (১৯), শাকিল (১৯), রিয়াদ (১৯), আব্দুল রব মিয়া (২৬), সাইফুল ইসলাম (২৮), রাসেল (২১), ইসমাইল (৩২), লোকনাথ রাজ বংশি (৩২), শম্ভু চন্দ্র দাস (৪০), শামীম (৪৬), রাজু (২১), মোজাফ্ফর (২৪), হাসান (২১), হৃদয় (২০), আরিফ (১৯), আতিকুল ইসলাম (১৯), হেলাল (৩২), রুবেল (২৭), রতন ওরফে মানিক (১৯), তছলিম (১৯) ও আনোয়ার (১৯)।
এদের মধ্যে রাকেশ ও মান্নান চক্রের হোতা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে এই সিন্ডিকেট পরিচালনা করছিল।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, যেকোনো উৎসব কেন্দ্র করে এদের তৎপরতা বাড়ে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে, পহেলা ফাল্গুন এবং বই মেলা কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকাকেন্দ্রীক তাদের তৎপরতা ছিল। আসন্ন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারিতেও ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা ছিল এই চক্রটির।
তিনি বলেন, ছিনতাইকারীরা সুযোগ পাওয়া মাত্রই পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে তারা। ছিনতাইয়ে বাধা দিলে প্রাণঘাতী আঘাতের ঘটনাও ঘটে।
সম্প্রতি খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, কমলাপুর, মতিঝিল, হাতিরঝিল, শাহবাগ, পল্টন, মানিকনগর, নন্দীপাড়া, গুলিস্তান এলাকায় ছিনতাইকারীদের তৎপরতার অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করে ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ছিনতাইয়ের কৌশলের বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, তারা টার্গেট ব্যক্তিকে আগে থেকে অনুসরণ করতে থাকে। টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে সুবিধামতো জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে চক্রের অন্য সদস্যরা উপস্থিত হয়ে টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কে জড়ায় ও মারধর শুরু করে। এরমধ্যে কেউ ছিনতাইয়ের কাজ সেরে ফেলে।
এছাড়া, কোনো রিকশা অথবা সিএনজি আরোহী যাত্রীদেরকে টার্গেট করে পিছু নেয়। সুবিধামতো স্থানে পৌঁছে যাত্রী ও চালককে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রিক্সা ও সিএনজি যাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয়।
সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।