রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩১ অপরাহ্ন
প্রধান সংবাদ :

ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল ভাংচুর।

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩

মাদারীপুরে ভুল চিকিৎসায় শারমীন বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শহরের কে আই হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা।

শুক্রবার (৩ মার্চ) রাত ১২টার দিকে শহরের পানিছত্র এলাকার কে আই হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এর আগেও গত ২৩ ডিসেম্বর একই অভিযোগে হাসপাতালটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

মৃত শারমীন বেগম সদর উপজেলার ছিলারচর এলাকার আনোয়ার খালাসির স্ত্রী ও একই উপজেলার কালিকাপুর এলাকার নূর মোহাম্মদ খানের মেয়ে। তিনি তিন সন্তানের জননী ছিলেন।

জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শহরের পপুলার হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শারমীন বেগম এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নিয়ম অনুযায়ী তাকে সাতদিন পরে সুস্থ অবস্থায় তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যান শারমীনের স্বামী। গত দুদিন ধরে শারমীনের মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হওয়ায় তাকে শুক্রবার সকাল ৯টায় শহরের কে আই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সাইয়েদা সিদ্দিকা ওরফে এলিজা নামে কনসালটেন্ট অ্যান্ড সার্জন ও গাইনি বিভাগের এক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে শারমীনের চিকিৎসা শুরু হয়।

দুপুর ১টার দিকে ওই রোগীর মেরুদণ্ডের ব্যথা কমানোর জন্য তার শরীরে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করেন চিকিৎসক। রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের শয্যায় শারমীনের মৃত্যু হয়। বিষয়টি গোপন রেখে রাত সাড়ে ৯টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হলে বিষয়টি ধরা পড়ে। তখন শারমীনের স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই রোগীর স্বজনদের একপর্যায়ে বাগ-বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

পরে স্থানীয় লোকজন ক্ষুদ্ধ হয়ে হাসপাতালটির সামনের গ্লাস ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও অভ্যর্থনা কক্ষে ভাঙচুর চালায়। এরপরই ঘটনার বিচার দাবিতে হাসপাতালের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন স্বজনরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শারমীনের স্বামী আনোয়ার খালাসী বলেন, পপুলার হাসপাতালে আমার স্ত্রীর সিজার করেন সাইয়েদা সিদ্দিকা এলিজা। তার ভুল চিকিৎসার কারণে আমার স্ত্রী সাতদিন ধরেই ব্যথায় ভুগছিলেন। তার সঙ্গে ব্যথার বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করলে তিনি আমার স্ত্রীকে কে আই হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। তার কথামত আমি হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে হঠাৎ শুনি আমার স্ত্রী আর জীবিত নেই। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, পিঠের ব্যথায় আমার স্ত্রী মরে নাই। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার স্ত্রীকে মরতে হইছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

নিহতের মা লিলি বেগম বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়েকে ওরা ভুল চিকিৎসা করাইছে। আমার কলিজার টুকরা মেয়েরে ঘুমের সুই দিয়া মাইরা ফালাইছে। ‘

কে আই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির হোসেন বলেন, আমি ওই রোগীর বিষয় কিছুই জানি না। হাসপাতালে কেন তারা ভাঙচুর চালালো তাও জানি না। তবে চিকিৎসকের কোনো ভুল নেই। তিনি তার সঠিক চিকিৎসা দিয়েছেন।

মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা রোগীর স্বজনদের বুঝিয়ে বলেছি, তারা লাশটি আমাদের কাছে দিয়েছেন। ওই নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বজনদের থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে, তারা অভিযোগ দিলে চিকিৎসক ও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © 2019 southbengalnews
themesba-lates1749691102