চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আখ ক্ষেত থেকে একটি কঙ্কাল ও ছেঁড়া গেঞ্জি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (১২ মার্চ) বিকেলে শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের চানকার মাঠ থেকে কঙ্কালটি উদ্বার করে পুলিশ।
চানকার মাঠের একটি আখ ক্ষেতে কয়েক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেহের বিভিন্ন অংশের কঙ্কাল, মাথার খুলি ও ছেঁড়া গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়েছে৷
এদিকে, ক্ষেতে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি আট মাস আগে নিখোঁজ হওয়া পাশের গ্রামের এক যুবকের বলে দাবি করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।
নিখোঁজ যুবক শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙা ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের মো. লুটুর ছেলে মো.আসাদুল্লাহ (২১)।
ওই যুবক নিখোঁজ হয় গত বছরের ২৭ জুন।
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আখ ক্ষেতে জমি চাষাবাদের পর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কঙ্কাল ও ছেঁড়া গেঞ্জি দেখতে পায় স্থানীয়রা।
পরে কয়েকশ হাত দূরে খোঁজাখুঁজি করলে একটি আম বাগানে মাথার খুলি ও চোয়াল দেখতে পাওয়া যায়।
নিখোঁজ যুবকের বাবা মো. লুটু আলী বলেন, প্রায় আট মাস আগে আমার ছেলে নিখোঁজ হয়। খেলতে যাওয়ার নাম করে আমার ছেলেকে নিয়ে হত্যা করে গুম করা হয়। থানায় জিডি ও আদালতে মামলা করেছি। কিন্তু কোনো খবর পাইনি। এমনকি গ্রামের লোকজনকে নিয়ে মাঠে অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও কোনো সন্ধান পাইনি।
উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল নিজের ছেলের দাবি করে তিনি আরও বলেন, যেই লাল রঙের গেঞ্জি গায়ে দিয়ে নিখোঁজ হয়, সেই গেঞ্জি পাওয়া গেছে আখ ক্ষেতে। তা দেখেই আমি নিশ্চিত এটা আমার ছেলের কঙ্কাল। আশা করি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ও আমি ন্যায়বিচার পাব। জিডিতেও এই গেঞ্জির কথা উল্লেখ করেছিলাম বলে জানান তিনি।
কয়েকটি কঙ্কাল ও মাথার খুলি উদ্ধার হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের মর্দনা গ্রামের বাহার হাজীর ছেলে আবু বাক্কারের চাষাবাদ করা জমিতে।
তিনি জানান, এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সর্বশেষ জমিতে গেছিলাম এক মাস আগে। ছয় মাস আগে শুনেছিলাম আমার পাশের একটি জমিতে মাথা পাওয়া গেছিল। আজকে পুলিশ খবর দিয়েছে, আমার জমিতে নাকি একটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাকিব বলেন, কয়েক মাস আগেও আম বাগানে শুধুমাত্র একটি মাথার খুলি পাওয়ার খবর পাওয়া গেছিল। তবে সেসময় দেহের অন্যান্য অংশ দেখতে পাওয়া যায়নি। আজকে (রোববার) খবর পেলাম দেহের অন্যান্য অংশের কঙ্কাল দেখতে পাওয়া গেছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. রোকনুজ্জামান সরকার, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. রোকনুজ্জামান সরকার বলেন, জরুরি সহায়তা সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এই এলাকায় যেহেতু একটি নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে মামলা চলমান রয়েছে ও তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটশন-পিবিআই তদন্ত করছে। তাই পিবিআই-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা এসে ঘটনাস্থলে আলামত সংগ্রহ করবে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।