রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
প্রধান সংবাদ :

নৌবাহিনী-কোস্টগার্ডের যুদ্ধ জাহাজ দেখে মুগ্ধ শিশু-কিশোরা।

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩

‘শুধু যুদ্ধ জাহাজের নাম শুনেছি, কিন্তু কখনো দেখা হয়ে ওঠেনি। আজ প্রথমবার সুযোগ হয়েছে যুদ্ধজাহাজ দেখার, সেটিতে ওঠার।

আর তাই যুদ্ধ জাহাজ এবং এর প্রতিটি জিনিস সম্পর্কে ভালোভাবে জানার পাশাপাশি দেখেছি মন ভরে। এতে নিজেকে ধন্য মনে করছি।’

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে বরিশাল নগরের মুক্তিযোদ্ধা পার্ক সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর বিআইডব্লিউটিএ এর ঘাটে সর্ব সাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা যুমনা’ ঘুরে দেখে বরিশাল নগরের কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা ও স্কুলছাত্র আমিন এ কথা বলে।

আমিন বলে, টেলিভিশন ও অনলাইনে বহুবার দেশের যুদ্ধ জাহাজের ভিডিও এবং ছবি দেখেছি।

কিন্তু কখনো তাতে ওঠে দেখার সৌভাগ্য হবে তা বুঝিনি। স্বাধীনতা দিবসে সেই সুযোগ পেয়ে বন্ধুদের নিয়ে দেখে গেলাম বাংলার গর্ব ‘বানৌজা যুমনা’ নামের যুদ্ধ জাহাজ। কামান, গোলাসহ এ জাহাজের ভেতরে এবং ওপরে এত কিছু থাকে তা আগে জানতাম না। আর কোনো বিষয়ে জানতে চাওয়া মাত্রই সুন্দরভাবে সেটি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন নৌবাহিনীর সদস্যরা। ফলে তাদের প্রতি ভালোবাসাটা বেড়ে গেলো।

রোববার (২৬ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বরিশাল নগরের মুক্তিযোদ্ধা পার্ক সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর বিআইডব্লিউটিএ’র ঘাটে সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়েছে ‘বানৌজা যুমনা’। তার অদুরে কোস্টগার্ডের জেটিতে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয় সমরাস্ত্রসহ জাহাজ ‘বিসিজিএস বগুড়া’।

সকাল থেকে টলটলে নদীর পানিতে ভেসে থাকা জাহাজ দুটি দেখতে শিশু-সন্তানদের নিয়ে আসেন অভিভাবকরা। সেসঙ্গে নানান বয়সী মানুষের পদচারনায় মুখরিত ছিল বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ দুটি। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা আগত দর্শনার্থীদের জাহাজ সম্পর্কে বর্ণনা দেন।

বানৌজা যুমনার অধিনায়ক কমান্ডার মো. তানভীর আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, ৪৬.৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৫ মিটার প্রস্থের বানৌজা যমুনা জাহাজটিতে দুটি ভারী গান (কামান) রয়েছে। বর্তমানে জাহাজটিতে ১০১ জন নাবিক ও ছয়জন কর্মকর্তা রয়েছেন।

তিনি বলেন, জাহাজটি উপকূলীয় এলাকায় চোরাচালান, জলদস্যু দমনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমন ও নির্মূলে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি জাটকা নিধন প্রতিরোধ, মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করার পাশাপাশি দুর্যোগের সময় সহায়তা ও ত্রাণ সহায়তার কাজ করে আসছে।

এদিকে উপকূলে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান, হিউম্যান ট্রাফিকিং, অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান প্রতিরোধ, মৎস্য সংরক্ষণ অভিযান, সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে আসা বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জাহাজ ‘বিসিজিএস বগুড়া’ পরিদর্শন করেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা। কাছ থেকে সমরাস্ত্রসহ জাহাজ ঘুরে দেখার এমন সুযোগ পেয়ে এখানেও ঢল নামে সব শ্রেণি-পেশার দর্শনার্থীর।

বিসিজিএস জাহাজের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, বর্তমান ‘বিসিজিএস বগুড়া’ ১৯৭৭ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন প্রাপ্ত হয়। পরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের এর বহরে ২০০৩ সালের ৫ মার্চ সংযোজিত হয়। যুদ্ধের জন্য জাহাজটিতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০ মিলিমিটার অর্লিকন গান, এলএমজি, সিএসএমজি, এসএ রাইফেল এবং পিস্তল।

এসব অস্ত্র চালানোর জন্য কোস্টগার্ডের জাহাজে রয়েছে প্রশিক্ষিত নাবিক। তারা তাদের দক্ষতার মাধ্যমে এসব অস্ত্র ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়াও নেভিগেশনের জন্য এ জাহাজটিতে রয়েছে জিপিএস, ইকো সাউন্ডার, ম্যাগনেটিক কম্পাস।

দেশের জলসীমার নিরাপত্তায় বিসিজিএস বগুড়াসহ বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সব জাহাজ ও সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতা, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত মনোবল নিয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছেন বলেও জানান বিসিজিএস জাহাজের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved © 2019 southbengalnews
themesba-lates1749691102